মজার খেলা টেবিল টেনিস - E Tips

Post Top Ad

Wednesday, March 28, 2018

মজার খেলা টেবিল টেনিস

এখন গ্রাম কিংবা শহর যেখানেই যান বা থাকেন মাঠ আর নেই বললেই চলে। একটু ঘাম ঝরানোর জন্য ক্রিকেট বা ফুটবল খেলবেন, যায়গা কই? তবে কে খেলাধুলা একেবারেই করবেন না? না করবেন, সহজে অল্প যায়গায় একটি মজার খেলা টেবিল টেনিস। আপনার বাসায় খালি একটি ঘর থাকলে, আর আপনার সাথে একজন থাকলেই আপনি এই খেলা খেলতে পারবেন।মাত্র দুইজন খেলোয়াড় এবং একটি খেলার টেবিল, ব্যাট, বল ও নেট হলেই এ খেলা শুরু করা যায়। ঘরোয়া ভাবে খেললে হয়ত আপনার তেমন কিছুই জানা লাগবেনা, স্পোর্টস শপে গেলেই রেডিমেট ব্যাট, বল, নেট পাওয়া যায়। তবে আন্তর্জাতিক আইনে টেবিল টেনিস খেলার জন্য এগুলোর স্পেসিফিক মান ও সাইজ আছে, সে মান বজায় রেখে খেলতে হবে। জেনে নিন এই খেলার উপকরণ গুলোর আন্তর্জাতিক মান ও নিয়মকানুন।

বলঃ
আন্তর্জাতিক আইনে খেলার উপযোগী বলের ওজন ২.৭ গ্রাম, ব্যাসার্ধ্য ৪০ মিলিমিটার এবং ওজন ১/১০ আউন্স হবে। ৩০.৫ সেন্টিমিটার উচ্চতা থেকে বল আদর্শ স্টিলের পাতে ফেললে বলটি ২৪-২৬ সেন্টিমিটার উচ্চতায় বাউন্স খাবে এরকম একটি প্লাস্টিক পদার্থ দিয়ে বল তৈরী করতে হবে। এর রং হবে সাদা কিংবা কমলা রঙের। টেবিলের রঙের উপর নির্ভর করে বলের রঙের ব্যবহার ঘটবে। যেমন: সাদা বল সহজেই সবুজ কিংবা নীল রঙের টেবিলে দৃশ্যমান হয়। তারকাখচিত চিহ্ন বলের মান নির্দেশক। তিন তারকাখচিত বল সর্বোচ্চ মানের এবং তা আনুষ্ঠানিক প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। স্পোর্টস শপে গেলেই রেডিমেট এই বল পেয়ে যাবেন।

টেবিলঃ 
ব্যবহৃত টেবিলের দৈর্ঘ্য ২.৭৪ মিটার (৯ ফুট লম্বা), প্রস্থে ১.৫২ মিটার (৫ ফুট চওড়া) এবং ৭৬ সেন্টিমিটার (২.৫ ফুট) উচ্চতাবিশিষ্ট টেবিলে হবে। ম্যাসোনাইট জাতীয় একপ্রকারের হার্ডবোর্ড কিংবা সমমানের কাঠ দিয়ে তৈরী টেবিলের আচ্ছাদন মসৃণ হতে হবে। টেবিলের উপর আড়াআড়িভাবে ৬ ইঞ্চি উঁচু একটি জাল খাটিয়ে তাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।। টেবিলের রঙ সবুজ অথবা নীল হবে।

র‌্যাকেট বা ব্যাটঃ 
খেলোয়াড়ের হাতলে ধরার উপযোগী করে একদিকে কিংবা উভয় দিকে কাঠের র‌্যাকেট রাবার দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে। স্পোর্টস শপে গেলেই রেডিমেট এই ব্যাট বা হাতল পেয়ে যাবেন। র‌্যাকেট ৩ ইঞ্চি হাতল এবং তার সঙ্গে ৩.২৫ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের গোলাকার অংশ জোড়ানো কাঠের বৈঠার মতো থাকবে।
ব্যক্তিগত কিংবা দলগত বিষয় হিসেবে এ খেলা টেবিলের উপরের অংশে খেলতে হয়। দুই জন বা চারজন হলেই এই খেলা যায়। টেবিল টেনিসে খেলোয়াড়গণ তাদের ব্যাট বা র‌্যাকেটের হাতলে বিভিন্নভাবে ধরতে পারেন। টেবিল টেনিসে সাধারণতঃ আক্রমণাত্মক এবং রক্ষণাত্মক কৌশল ভাঙ্গার জন্য স্ট্রোক প্রয়োগ করা হয়। যেমন- -আক্রমণাত্মক কৌশলের মধ্যে রয়েছে - স্পিড ড্রাইভ, লুপ, কাউন্টার-ড্রাইভ, ফ্লিক, স্ম্যাশ। -রক্ষণাত্মক কৌশলের মধ্যে রয়েছে - পুশ, চপ, ব্লক, লব।
ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস ও রাগবির পরই বিশ্বের জনপ্রিয় খেলা টেবিল টেনিস। ছোট জায়গায় টিটি খেলা যায়। বাড়ির কার পার্কিং, ডাইনিং স্পেস, ড্রয়িং রুম, কমিউনিটি রুম এবং পাড়ার ক্লাবও হতে পারে টিটি খেলার আদর্শ স্থান।
টেবিল টেনিস নিয়ে কিছু তথ্য-
* ১৯২৬ সালে আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিস ফেডারেশন বা আইটিটিএফ টেবিল টেনিসের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
* টেবিল টেনিসকে পিং পং বলা হয়।
* ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডে টেবিল টেনিসের উৎপত্তি ঘটে।
 * আধুনিক অলিম্পিকে এ ক্রীড়া ১৯৮৮ সালের সিউল অলিম্পিকে অন্তর্ভূক্ত হয়।
* বিশ্বের অধিকাংশ সেরা টেবিল টেনিস খেলোয়াড় চীন দেশের জন্মগ্রহণকারী।
 * আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিস ফেডারেশন (আইটিটিএফ) জুনিয়র সার্কিটের ভেন্যু হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে বাংলাদেশকে।
* গিনেস বুক রেকর্ডধারী বাংলাদেশের টেবিল টেনিস খেলোয়াড় জোবেরা রহমান লিনু ।
* ১৯৭২ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন। একই বছর এটি এশিয়ান ও ওয়ার্ল্ড টেবিল টেনিস ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত হয়।
* ৬ এপ্রিলকে বিশ্ব টিটি দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে আইটিটিএফ।
* টেবিল টেনিস বা পিংপং খেলাকে ঘিরে ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটে।
* আইটিটিএফের অন্তর্ভুক্ত বিশ্বের প্রায় ২২০টি দেশ।

‘টেবিল টেনিস সবার জন্য, সর্বত্র’। আমি আপনার সাথে খেলতে চাই, সবাইকে নিয়ে খেলতে চাই। বাংলাদেশ একদিন চ্যাম্পিয়ন হোক টেবিল টেনিসে- শুভ কামনায় ই টিপস।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad