ইলেকট্রিক্যাল, ব্যাপারটি কি তাই? - E Tips

Post Top Ad

Thursday, March 8, 2018

ইলেকট্রিক্যাল, ব্যাপারটি কি তাই?


ইলেকট্রিক্যাল এর কিছু বিষয়, আমরা বিভিন্নভাবে জানি ও বিশ্বাস করি। এখানে কিছু বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করছি-

১) অনেকেই মনে করেন যে সকল প্রাণী ডিম (পাখি) পাড়ে তাদের শক করেনা, ব্যাপারটি কি তাই?
ব্যাপারটি আসলে তাদের গায়ে লোম বা পালক থাকে পায়ে ইনসুলেশন করা থাকে তাছাড়া এগুলো এক তারের উপর বসে তাই এদের মধ্যদিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয় না। পালক তুলে সাপ্লাই দিয়ে দেখেন কি হয়? পাখির মত আপনি একতার ধরে ঝুলে থাকলে আপনাকেও শক করবেনা। বাদুড় বাবাজীর কিন্তু কপাল মন্দ ওর গায়ে লোম নেই পাখাটাও বড় তাই দেখবেন বাদুড় কমপক্ষে দুই তারের মধ্যে আটকে থাকে। বাদুড় কি ডিম দেয়? হা হা আহা...। অনেকদিন পর বুঝেছি হোস্টেলে তানজিম ভাই এর গায়ে টেস্টার লাগালে টেস্টার জ্বলে কিন্তু তাঁর কিছুই হয়না কেন ( তানজিম ভাই শুখনা কাঠের উপর দাড়িয়ে ফেজ তারে হাত দিত, আমি তাঁর গায়ে টেস্টার লাগাতাম টেস্টার জ্বলত কিন্তু তানজিম ভাই তাঁর শরীর স্পর্শ করতে দিতনা আমাকে (আমি যে মাটিতে দাড়িয়ে আছি এটা তো তানজিম ভাই দেখেছিল) । আমি ভয়ে তাকে স্পর্শ করতাম না ।

২) আমরা অনেকেই মনে করি ডিসি সাপ্লাই শক করেনা, ব্যাপারটি কি তাই?
আসলে কিন্তু ডিসিতে এসির চেয়ে বেশী শক করে । আমরা যে ব্যাটারী ধরি তার ভোল্ট ১.৫ থেকে ১২ তাই শক করেনা । ৬০ ভোল্টের উপরে গেলেই কেবল শক অনুভব করি। আসলে শক নির্ভর করে ভোল্টেজের উপর এবং এর তীব্রতা নির্ভর করে আপনার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট এর উপর । আপনি কখনও শক খেয়েছেন? আমি খেয়েছি (এসিতে) তাই আমি জানি শক কাকে বলে, পেট ভরেনি মাথা ঘুরেছে ।

৩) ভোল্টেজ কমলে কারেন্ট বাড়ে না কমে, আপনি কি বলবেন?
আমরা জানি, পাওয়ার = ভোল্টেজ x কারেন্ট । তাহলে আপনি বলবেন কারেন্ট বাড়ে কারণ, জোর দিয়ে বলবেন ভোল্টেজ কমলে অবশ্যই কারেন্ট বাড়বে ।
উধাহরনটি দেখলে আমাকে গালি দেবেন না? ৫০০ ওয়াটের একটি বাল্ব যদি ২৫০ ভোল্টে চলে তাহলে কারেন্ট নেবে ২ অ্যাম্পিয়ার । যদি ভোল্টেজ ১২৫ হয় তবে নেবে ৪ অ্যাম্পিয়ার। কিন্তু ১ অ্যাম্পিয়ার নেবে । আসলে থিউরিটিক্যালি বাড়ে বাস্তবে কমে।

হিসাবটা দেখুন-  P = VxI = VxV/R ( P= পাওয়ার, V =ভোল্টেজ, I= কারেন্ট, R= রেজিস্ট্যান্স)
রেজিস্ট্যান্স হল বাল্বের কন্সট্যান্ট মান যা স্থির থাকবে আপনি বাড়াতে বা কমাতে পারবেন না । ৫০০ ওয়াটের বাল্বের রেজিষ্ট্যান্স হবে ১২৫ ওহম (R= VxV/P) । ভোল্টেজ যখন ২৫০ তখন সে ওয়াটেজ দেবে ২৫০x২৫০/১২৫= ৫০০ আর ভোল্টেজ যখন ১২৫ তখন সে ওয়াটেজ নেবে ১২৫x১২৫/১২৫ =১২৫ ওয়াট। এবার বলুন পাওয়ার দেবে ১২৫ ওয়াট ভোল্টেজ নেবে ১২৫ ভোল্ট তাহলে কারেন্ট কি নেবে ৪ অ্যাম্পিয়ার? কারেন্ট = ১২৫/১২৫= ১ অ্যাম্পিয়ার (I= P/V)। এবার বুঝেছেন ভোল্টেজ কমলে বাল্ব আলো কম কেন দেয়?

তাহলে ডেল্টা -স্টার সংযুক্ত একটি ট্রান্সফরমারের সেকেন্ডারি পাওয়ার, প্রাইমারি থেকে কত গুন কম বেশি হবে? উত্তরঃ কম বেশি হবে না । আরে কি ভাই? স্টারে তো ভোল্টেজ কমে যায়...... তাহলে?

৪) হাউজ ওয়্যারিং-এ অনেকেই লাল তার দেখলেই সেটাকে ফেজ আর কালো দেখলে নিউট্রাল মনে করেন, এটা কি ঠিক?
এ ব্যাপারে সাবধান থাকবেন । আপনি যদি কালো তারকে ফেজের সংগে যুক্ত করেন তবে সেটা কিন্তু ফেজ তার হয়ে যাবে। তাই কাজের আগে টেষ্টার দিয়ে টেষ্ট করুন। আপনি যথন ওয়্যারিং করবেন তখন মনে রাখবেন লোডের দুই প্রান্তে ফেজ ও নিউট্রাল তার যুক্ত করতে হবে ।

৫) আচ্ছা, হাউজ ওয়্যারিং-এ ৩-পিন হলে সবুজ রঙের তারটি কি করবেন?
৩-পিন সকেটে আর্থ পিন থাকে, সাবধানে এটাও সংযোগ করতে হবে আপনার নিরাপত্তার জন্যই । ৩-পিন সকেটে উপরে আর্থ সংযোগ দিতে হয়, আর ৩-পিন প্লাগে বড় পিনটি ইকুইপমেন্টের বডিতে (মেটাল চ্যাসিস) কানেকশন থাকে । থ্রি-পিন প্লাগে আর্থ বা গ্রাউন্ড পিন বাকী দুইটি পিনের চেয়ে লম্বা থাকে কেন? এর কারণ হলো প্লাগটি যেনো সকেটে লাগানোর সময় আর্থ পিনটি সবার আগে কানেক্টেড হয় এবং খোলার সময় সবার শেষে ডিসকানেক্টেড হয়। এর ফলে বৈদ্যুতিক যন্ত্রের গায়ে যদি কোন স্ট্যাটিক চার্জ জমা হয় তা মাটিতে চলে গিয়ে যন্ত্রটিকে সুরক্ষিত রাখে । সিকুরিটি গার্ড অনেক লম্বা......।

৬) ২-পিন সকেটের উভয় পিনে টেষ্টার জ্বলে কিন্তু বাতি জ্বলে না, দুইটাই কি ফেজ?
ফেজ তার পরে চেক করেন, আগে নিউট্রাল কেন পাচ্ছে না সেটা দেখেন ।

৭) একটা মজার ব্যাপার জানেন? আপনি ছাড়া এটা কে বিশ্বাস করবে?
ট্রান্সফরমারের মজার বিষয় হল প্রাইমারী সাইড ও সেকেন্ডারী সাইড উভয়ের মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল তার দিয়ে সংযোগ করা থাকেনা । তাহলে পাওয়ার কিভাবে প্রাইমারী সাইড থেকে সেকেন্ডারী সাইডে যায়? আচ্ছা আপনার গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের লাইনে ট্রান্সফরমার কেন ব্যবহার করেছে? আবার আমাদের গ্রামের প্রায় সবাই ট্রান্সফরমার কে এখনো ট্রান্সমিটার বলে, কোথায় যে পাইলো বুঝিনা আমি।

বিদ্যুৎ কি দেখতে পান? বাস্তবে না দেখেও বিপদ জনক মেনে নিতেই হবে । তাই বলে বিদ্যুৎ কে ভয় পাবেননা বরং সতর্ক হোন, নিরাপত্তা বিধান মেনে কাজ করলে রক্ষা পাবেন আপনি ও ডিভাইস। নিরাপদ হোক আপনার চলার পথ- ই টিপস বিডি ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad